আজকাল সবাইকে বলতে শোনা যায় থিংক পজিটিভ। সব কিছুকে পজিটিভলি দেখুন। অথবা দৃষ্টিভঙ্গিকে ইতিবাচক করুন।
ইতিবাচক চিন্তা আসলে কি?
ইতিবাচক চিন্তা মানে হলো “যে কোনো অবস্থায় সঠিক চিন্তা করতে পারা”। যে কোনো অবস্থায় বা যে কোনো পরিস্থিতিতে সঠিক চিন্তা করাকেই পজিটিভ থিংকিং বলে। এখন প্রশ্ন হলো সঠিক চিন্তা বলতে কী বুঝায়। সঠিক চিন্তা বলতে বুঝায় “যা কিছু ঘটেছে সেই ঘটনাকে ওইভাবেই দেখা এবং ভাবা”। অর্থাৎ যা ঘটেছে তা ঘটার মতো করে দেখা অর্থাৎ সোজাভাবে দেখা, বাঁকাভাবে নয়। বাঁকাভাবে দেখলে চিন্তা বাঁকা হয়ে যাবে। বিষয়টি একদম সোজা যেমন আপনি কোনো কিছু সঠিক দেখতে পান তখনই যখন আলো সেই বস্তুর উপর সোজা হয়ে পড়বে এবং সোজাভাবে আপনার চোখের ভেতর প্রবেশ করবে তখনই তা আপনি দেখবেন। সুতরাং কোনো বিষয় বা ঘটনাকে সোজা ভাবে যদি আপনার কাছে উপস্থাপিত না হয় বা সোজাভাবে যদি না দেখেন বা না ভাবেন তবে সিদ্ধান্ত কখনই সঠিক হবে না। সুতরাং যা কিছু হয়েছে বা ঘটেছে তা সেইভাবে দেখতে পারা সঠিক চিন্তা করতে পারার পূর্বশর্ত।
ইতিবাচক চিন্তা আপনাকে এনে দিতে পারে সাফল্যের স্বাদ। কেননা ভাবনা ভালো হলে কাজ করার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসটা টইটুম্বুর থাকে। আর নিজের আত্মবিশ্বাস অটুট থাকলে আপনি যতই হোচট খান না কেন, ঠিক উঠে দাঁড়িয়ে পুনরায় সাফল্যের পথে হাটবেন। আর তখন সাফল্যের শীর্ষচূড়ায় আপনার অবস্থান কেউ আটকাতে পারবে না। অন্যদিকে আপনি যদি কাজ করার আগেই নেতিবাচক চিন্তা করেন তাহলে আপনার আত্মবিশ্বাসের খুটি নড়বড়ে হয়ে যাবে এবং অনুপ্রেরণায় ঘাটতি দেখা যাবে। আর সাফল্যের এই দুটি মূল ভিত্তিই যদি নড়বড়ে হয়ে যায় তাহলে ব্যর্থতার তকমা কপালে লেপতে হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই আমাদের ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে জীবনের প্রত্যেক পদক্ষেপেই।
নিচের কৌশল সঠিকভাবে অবলম্বন করলে আপনিও ইতিবাচক চিন্তাশক্তির অধিকারী হতে পারবেন।
সময় নিন
জীবন নামক গোলক ধাঁধায় আমাদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। জীবনে চলার পথে যেমন ভালো সময় আসে ঠিক তেমনি আসে খারাপ সময়ও। আর সেই খারাপ সময়কে অতিবাহিত করতে সময় নিন। আগেই নেতিবাচক চিন্তা করে ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন না। অপেক্ষা করুন খারাপ সময়টি কাটার জন্য, নিজেকে সময় দিন। আর এটি আপনার ইতিবাচক চিন্তা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এবং এটি আপনার আত্মা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাছাড়া সময় ক্ষত সারাতে সহয়তা করে এবং এটি আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।
ইতিবাচক মানুষের সাথে মিশুন
নেতিবাচক মানুষের সাথে মেলামেশা করলে ধীরে ধীরে আপনার চিন্তাও নেতিবাচক দিকে রূপ নেবে এবং যেটা আপনার জীবনে ভয়ংকর প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু আপনি যদি ইতিবাচক মানুষের সাথে মেলামেশা করেন তাহলে আপনার চিন্তাশক্তিও তাদের সংস্পর্শে পজেটিভ হবে। এবং তাদের কাছ থেকে অনেক শিক্ষা নিয়ে জীবনে চলার পথে কাজে লাগিয়ে উন্নতি সাধন করা সম্ভব। কারন,
“সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস,অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ”
ইতিবাচক উক্তি পড়ুন
ইতিবাচক চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি করতে চাইলে ইতিবাচক উক্তি পড়ার বিকল্প আর কিছু নেই। মোটিভেশন ছাড়া জীবনে বেঁচে থাকা কঠিন। মোটিভেশন আমাদের প্রভাবিত করে, আর এটা আপনাকে কাজে লাগাতে হবে। ইতিবাচক উক্তি পড়লে সেই উক্তি গুলো আমাদের চিন্তাশক্তিকে প্রভাবিত করবে। আমাদের উদ্ভুদ্ধ করবে ইতিবাচক চিন্তা করতে। সঠিক রাস্তা দেখাবে যেই রাস্তা ধরেই সাফল্যের করিডোরে পৌঁছানো সম্ভব। তাই ইতিবাচক উক্তি পড়া প্রয়োজন। আর শুধু পড়লেই হবে না, সেই অনুযায়ী কাজ করলেই আপনার চিন্তাশক্তি ইতিবাচক হবে।
ভুলের উৎস খুঁজে বের করুন
ইতিবাচক চিন্তার মানে এই নয় যে আপনি আপনার ভুল গুলোকে এড়িয়ে যাবেন। আপনার ভুলগুলো বা নেতিবাচক দিকগুলোকে খুঁজে বের করে ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে সেই ভুলের সমাধান করে এগিয়ে চলুন। কিন্তু আমরা যদি ভুলগুলোকে এড়িয়ে যাই তাহলে কোন ক্ষেত্রেই উন্নতি করা সম্ভব নয়। কেননা ভবিষ্যৎ এ আমরা সেই ভুলগুলো পুনরায় করব। কিন্তু ভুল করে ভুলের উৎস খুজে বের করে বুদ্ধিমত্তার সাথে সেগুলোর সমাধান বের করলে পরবর্তীতে আমাদের দ্বারা সেই ভুলগুলো আর হবে না।
তানিয়া আক্তার
ইন্টার্ন/ওয়াইএসএসই