এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ( ADB) এশিয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য গঠিত হয়। এটি মূলত প্রতিষ্ঠা হয় কিছুসংখ্যক জাপানীদের আগ্রহের প্রেক্ষিতে। তারা ১৯৬২ সালে ব্যাংকের মাধ্যমে আঞ্চলিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রাইভেট প্ল্যান বা বেসরকারী পরিকল্পনা ও চিন্তাধারা গ্রহণ করে। পরবর্তীকালে জাপান সরকার এতে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬৬ সালে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই জাপান এখানে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে। ১৯৮৮ সালে জাপান সরকারের অর্থায়নে Asian Development Bank – Japan Scholarship Program (ADB-JSP) চালু হয়।
এই স্কলারশিপের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এই ব্যাংকের সদস্যভুক্ত উন্নয়নশীল দেশসমূহ থেকে দক্ষ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় সহায়তা করা যাতে তারা নিজের দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারে।
প্রতিবছরের ন্যায় এইবছরও নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ বিনা খরচে এডিবি মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য অধ্যয়নের সুযোগ করে দিচ্ছে। চলুন স্কলারশিপটি সম্পর্কে জেনে নিই।
ইউনিভার্সিটি ইফ অকল্যান্ডে এডিবির অর্থায়নের পড়তে হলে আপনার জন্য নিম্নোক্ত প্রোগ্রামগুলো রাখা হয়েছে-
- মাস্টার্স অফ পাবলিক হেলথ ( Master Of Public Health)
- মাস্টার্স অফ সায়েন্স (Master Of Science : Environment Science)
- মাস্টার্স অফ আর্টস ( Master Of Arts)
- মাস্টার্স অফ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ( Master Of International Business)
- মাস্টার্স প্রোগ্রাম ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ( Masters Programmes in Engineering)
যারা আবেদন করতে পারবেন
- এডিবির সদস্যভুক্ত দেশের নাগরিক হতে হবে
- অবশ্যই স্নাতক বা তার সমমানের ডিগ্রী থাকা
- স্নাতক পাশ করার পর অন্তত দুইবছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকা
- ইংরেজিতে খুব ভালো দক্ষ হওয়া
- স্বাস্থ্যগত সমস্যা না থাকা
- আবেদনের সময় বয়স ৩৫ এর নিম্নে হতে হবে
এতো গেল আবেদনকারীদের তথ্য। এখন জেনে নিই আবেদন করতে হলে কি কি করতে হবে।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
- আবেদনকারীকে প্রথমে এডিবির দেওউয়া ইনফর্মেশন শিট ( Information Sheet) পূরণ করতে হবে
- এরপরে উক্ত শিট পূরণের পর তাদের দেওয়া একটি ফর্ম পাওয়া যাবে। সেই ফর্মে আপনার সব তথ্য দিতে হবে
- ডকুমেন্টস হিসেবে অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার থাকা বাঞ্চনীয়
- এছাড়াও আবেদনের সময় একাডেমিক সব কাগজপত্র দিতে হবে
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে
- আপনার এবং আপনার পরিবারের আয়ের সার্টিফিকেট প্রদান করা
- পাসপোর্টের কপি দেওয়া
- অবশেষে আইএলটিএস এর স্কোর প্রদান করা
উক্ত কাগজপত্রগুলো ডাকযোগে অকল্যান্ডে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে আপনার এই ডকুমেন্টস যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের কমপক্ষে ছয় মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পেয়ে থাকে। পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় আপনার সাথে ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করবে।
সুবিধাসমূহ
আগেই বলেছি যে এটি সম্পূর্ণ বিনা খরচে আপনাকে অধ্যয়নের সুযোগ করে দিবে। তো কি কি সুবিধা পাচ্ছেন এই স্কলারশিপে চলুন জেনে নিই–
- অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার জন্য সাধারণ সব ফি প্রদান
- নিজ দেশ থেকে অকল্যান্ডের বিমান ভাড়া প্রদান
- অকল্যান্ডে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খরচ দেওয়া
- মেডিকেল ইন্সুরেন্স প্রদান করা
- যারা গবেষণা করতে আগ্রহী , প্রয়োজনে তাদেরকে অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করা
- ডিগ্রী শেষে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার খরচ প্রদান করা।
সাবমিশনের সর্বশেষ সময় আগামী ১৯ শে জুলাই ২০২১। সাবমিশনের পর এডিবির জাপান কর্তৃপক্ষ ও অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি আরো দুইমাস ধরে যাচাই বাছাই করবে। অবশেষে নভেম্বরের দিকে নির্বাচিত স্কলারগণদের সাথে তারা যোগাযোগ করে নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার ব্যবস্থা শুরু করবে।
এডিবির এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামটি পৃথিবীর অন্যতম স্বনামধন্য স্কলারশিপ। এই পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন হাজারে অধিক শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপের সুবিধা নিয়েছে। জাপান সরকারের সহায়তায় নিউজিল্যান্ড ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, চীন, জাপান, ফিলিপাইনসহ আরো কয়েকটি দেশে এই স্কলারশিপের আওতায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। তাই আপনি যদি মনে করেন আপনি এই স্কলারশিপের যোগ্য তাহলে আজই আবেদন করে ফেলুন !
আরো জানতে এই লিংকে ঘুরে আসতে পারেন।
শেখ সাব্বির ইসলাম মাহি
ইন্টার্ন, কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট
YSSE
আমাদের আরো ব্লগ পড়ুন এখানে