করোনাভাইরাস মহামারীর বিস্তার বিশ্বের প্রায় সমস্ত মহাদেশ এবং দেশকে প্রভাবিত করেছে। মহামারী জনিত সমস্ত বিশৃঙ্খলার মাঝেও ব্যবসা জগতের জন্য এখনও আশার আলো দেখা যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে বিশ্বস্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রকদের ঘোষণাগুলি উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। একদিকে যেমন নতুন ব্যবসার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে করোনাকালীন এই জটিল সময়ে উদ্যোগী এবং ব্যবসায়ীদের পক্ষে তাদের গ্রাহকদের সেবা প্রদান করার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
১.মুদি সামগ্রী সরবরাহ:
মহামারীর সংস্পর্শে আসার ভয় মানুষকে মুদি দোকানে এবং বাজারে যেতে বাধা প্রদান করছে। ফলে তারা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী অনলাইনে অর্ডার করতেই বাধ্য হচ্ছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলিতে মুদি সরবরাহের অ্যাপগুলির ডাউনলোডের সংখ্যায় তাৎপর্যপূর্ণ বৃদ্ধির এটিই প্রধান কারণ।
২.ঔষধ সরবরাহ:
বর্তমান পরিস্থিতিতে, ফার্মাসিউটিক্যাল ব্যবসার গুরুত্ব সর্বাধিক। কেবলমাত্র ভাইরাসে আক্রান্তরা নন, যারা ছোট বা বড় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন, তারাও এই সংকটময় মুহূর্তে সময়মতো প্রয়োজনীয় ওষুধ পেতে ব্যর্থ হচ্ছেন। অতএব, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবদান রাখার জন্য অনলাইন ঔষধ সরবরাহ ব্যবসাগুলিকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে।
৩.অনলাইন খাবার সরবরাহ:
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে সরকার কর্তৃক দেশের সকল রেস্তোঁরাগুলিকে তাদের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ প্রদান করা হয়। তবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অনিশ্চয়তার কারনে রেস্তোঁরাগুলি এবং বেশকিছু উদ্যোক্তা বাড়িতে তৈরিকৃত খাবার অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন।
৪.পিকআপ এবং বিতরণ:সমস্ত ধরণের ব্যবসা গ্রাহকদের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর উপায় হিসেবে ডেলিভারি ব্যাবস্থা জীবন রক্ষাকারী হয়ে উঠছে এবং এই কারণেই, বিতরণ পরিসেবাগুলি করোনভাইরাস সংকটের মধ্যে তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে সক্ষম হচ্ছে।
৫.অনলাইন শিক্ষা অ্যাপ:
বিশ্বব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি তাদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এই সংকটটি অবশ্যই অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার সূত্রপাত ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২০ সালের মার্চে শিক্ষামূলক অ্যাপ্লিকেশনগুলি ডাউনলোডের সংখ্যা প্রায় ৩০০% বৃদ্ধি পেয়েছে যা বর্তমান জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সহায়তা করার পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্যও বিশ্বকে প্রস্তুত করছে।
৬. ফিটনেস এবং ওয়েলনেস অ্যাপ:
অফলাইন জিম এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি মহামারীর কারনে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত ব্যবসাগুলির মধ্যে অন্যতম। অন্যদিকে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস শিল্পের আশীর্বাদ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। বিজনেস ইনসাইডার জানিয়েছে যে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব রোধে প্রধান জিম চেইনগুলি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার কারণে, লোকেরা বাড়িতে তাদের অনুশীলনের রুটিন বজায় রাখার জন্য ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল ওয়ার্কআউট প্রোগ্রামগুলির দিকে ঝুঁকছে। অনলাইন প্রশিক্ষণ অ্যাপ্লিকেশন থেকে শুরু করে যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশন অ্যাপ্লিকেশনগুলি গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
- ফারহানা ইয়াসমিন/ওয়াইএসএসই