ব্যবসার মূল দিকটাই হচ্ছে টাকা। যখন আপনি নতুন কোনো পণ্যকে বাজারে আনতে যাবেন তখন টাকা বৃদ্ধি করাটা খুবই জরুরি, এই প্রয়োজনীয়তা আপনার ক্ষুদ্র ব্যবসার উন্নয়নের জন্যে তো বটেই, এছাড়াও নিজস্ব ব্র্যান্ডিং এর জন্যেও জরুরি। ক্রাউড-ফান্ডিং হলো এমন একটি উপায় যার মাধ্যমে আপনি চলতি ধারার বাইরে ইনভেস্টরদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারবেন।
ক্রাউড-ফান্ডিং এর মাধ্যমে অনেক বড় পরিসরে বিক্রি করা এবং বিচিত্রতা আনা সম্ভব যা অনেক আদর্শ পদ্ধতিতেও সম্ভব হয় না। এই ক্ষেত্রে আপনি যেকোনো লেভেলে ইনভেস্ট করতে পারবেন। এছাড়াও আপনার এবং আপনার ইনভেস্টরের জন্যেও নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু করা সম্ভব।
ক্রাউড-ফান্ডিং ক্যাম্পেইনকে সফল করার কিছু আর্ট রয়েছে, সেগুলোকে উপায়ও বলা যেতে পারে। যেমনঃ
১/ আবেগীয় বার্তা নির্বাচন।
ক্রাউড-ফান্ডিং এর প্রধান দিকই হলো নিজস্ব একটা তত্ত্ব নির্দিষ্ট করা যা বার্তা এবং আবেগের ভিতর একটা সংযুক্তির সৃষ্টি করবে। এক্ষেত্রে কর্পোরেট বা খুব প্রফেশনাল না হয়ে বরং ক্যাজ্যুয়াল, আবেগীয়, রসাত্মক হতে হবে। যদি আপনার বার্তা খুব বেশি সঠিক বলে মনে হয় সেক্ষেত্রে দর্শক ভাববে আপনার এই ক্যাম্পেইনের প্রয়োজনীয়তা কি!
২/ বাজার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টিতে পণ্যের মান নিশ্চিতকরণ।
আপনার ক্যাম্পেইন এর মূল লক্ষ্য হতে হবে বিশেষ এবং অনন্য। এর ভেতর উদ্ভাবনী বা কোনো ঘাটতি বা প্রয়োজনীয়তার সংমিশ্রণ থাকতে হবে। যেমন আপনি টিশার্ট অফার করছেন কোনো ক্ষেত্রে দানের উদ্দেশ্যে ইত্যাদি। তবে যা-ই হোক না কেন আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে বাজার প্রতিক্রিয়া এমন হতে হবে যেন এর একটা গুণগত মান রয়েছে, শুধু ভাষার ব্যবহারেই সকলকে আকৃষ্ট করা নয়।
৩/ সময়সীমা নির্ধারণ।
প্রতিটি ক্যাম্পেইনের একটা সমাপ্তি তারিখ থাকে। একটা সময়ে ফান্ডিংটাকে বন্ধ করতে হবে। তাই কিছু বিষয় এক্ষেত্রে মাথায় রাখাটা জরুরী। আপনার একটা ক্যালেন্ডার প্ল্যান থাকতে হবে কী করবেন এবং কীভাবে করবে তার উপর।শুরুর পূর্বের সময়টাতে আপনার কাজ হবে যতটা সম্ভব সকলের আগ্রহ সৃষ্টি করা। সেটা হবে পারে ইমেইল বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বা অন্য কোনো উপায়ে।
এছাড়াও ক্যাম্পেইন এর সময়সীমা নির্বাচনের সময় সরকারি ছুটি, ধর্মীয় ছুটি ইত্যাদির দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
৪/ লিখিত খসড়া তৈরি।
যারা যারা আপনার ক্যাম্পেইনের সাথে যুক্ত থাকবেন সকলকে একই বিষয়গুলোকে ব্যবহার করতে হবে, যেমন- কীভাবে শুরু হলো তার গল্পটা জানা, কোথায় এবং কতদূর যেতে চান এবং কীভাবে যেতে চান। এ বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা আপনার ক্রাউড-ফান্ডিং ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য এতেই নিহিত রয়েছে।
এখানে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনার এই লেখা কপিরাইটের প্রতি সম্মান জানাতে হবে।
৫/ বহুমাত্রিকতা।
বৈষয়িক অনুলিপি থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে বুঝতে হবে,পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং অভ্যন্তরীণ সম্পর্কগুলোকে স্বচ্ছ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে বহুমাত্রিক হতে হবে। যেমন একটা মিডিয়া ফাইল তৈরি করুন যাতে বিভিন্ন প্লাটফরমে ছড়িয়ে দেয়া যায়। এছাড়া যারা আপনার পণ্য ব্যবহার করে তাদের ছবি, তাদের প্রশংসাবাণী বা পত্র ইত্যাদি সংগ্রহে রাখা। এছাড়াও শিক্ষণীয় এবং বিনোদনমূলক ভিডিও তৈরি যেখানে আপনাদের কাজ এবং কাজ সম্পর্কে ব্যবহারকারী এবং মূল্যায়ঙ্কারীদের মন্তব্য থাকবে যা আপনার ক্যাম্পেইনকে বৃহৎ মাত্রায় নিয়ে যাবে।
৬/ সার্বিক উন্নয়ন।
আপনার শুরুর কাজের উন্নয়ন ঘটানো খুবই প্রয়োজন। যেমন ক্যাম্পেইনের পূর্বে আপনার কোম্পানির ওয়েবসাইটকে ঢেলে সাজানো বা ভাষাগত উন্নয়ন বা লোগো,ব্যবসায়িক কার্ড বা অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোকে পুনরায় বিবেচনা করা এবং সে অনুযায়ী সাজানো।
এক্ষেত্রে সবথেকে বেশি খেয়াল রাখুন কোন কোন সোশ্যাল মিডিয়া আপনাকে বেশি সহায়তা করছে। ডেমোগ্রাফিক গবেষণা করে নিতে পারেন।
সব কথার মূল কথা হলো আকর্ষণ করা। এখন আপনি আপনার ভোক্তা এবং ইনভেস্টরদেরকে কীভাবে আকৃষ্ট করবেন তা আপনি নিজেই ভালো করে বুঝতে পারবেন। এখানে আপনাকে কিছু দিকনির্দেশনা দেয়া হলো মাত্র।
কানিজ ফাতেমা কলি