যেকোন ধরনের ইন্টার্ণশিপ বা কর্পোরেট চাকরিতে ঢুকতে গেলে প্রথমেই যেই জিনিসটা সবার লাগবে সেটা হচ্ছে “Resume”। বর্তমানে অধিকাংশ চাকরিতে আবেদনের সর্বপ্রথম ধাপই হচ্ছে আকাঙ্ক্ষিত চাকরি প্রদানকারী কোম্পানির কাছে আপনার Resume টা পাঠানো। আপনার Resume দিয়েই অসংখ্য প্রার্থীদের মধ্যে থেকে আপনাকে বিবেচনা করে ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকা হবে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন একটি “Resume” কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
“Resume” যার বাংলা করলে দাড়ায় জীবনবৃত্তান্ত। এটি একটি ফরাসি শব্দ, এজন্য এটাকে অনেক সময় “Résumé” – এভাবেও লেখা হয়। এটির সর্বপ্রথম উৎপত্তি হয় লিওনার্দো দা ভিঞ্চির হাত ধরে ১৪৮১-১৪৮২ সালে।
“Resume” এবং “CV” কিন্ত এক নয়। আমরা আজকে একটা Resume তে কি কি লেখা যাবে এবং কি কি লেখা যাবে না সেগুলো নিয়ে কথা বলবো।

Resume Do’s & Don’t’s
প্রথমেই আসি একটা Resume – তে কি কি থাকা শ্রেয় –
১) প্রতিটি চাকরিতে আবেদনের পূর্বে আপনার Resume টি কাস্টমাইজ করুন : একেকটি চাকরির কাজের ধরন একেক রকম হয় বা তাদের রিকুয়ারমেন্ট গুলোও আলাদা হয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই তাদের কাজের বিবরণী অনুযায়ী নিজের Resume কে সাজাতে হবে।
২) অভিজ্ঞতা : আপনার সবচেয়ে সাম্প্রতিক এবং গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা গুলো আগে দিন। চাকরির রিকুয়ারমেন্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা গুলো একটি একটি করে ধারাবাহিক লিখুন।
৩) কৃতিত্ব : আপনার সাফল্য বা কৃতিত্ব গুলো Resume তে একটি আলাদা সেকশনের ভিতরে সুন্দর করে সাজিয়ে লিখতে ভুলবেন না। আপনার সাফল্য বা কৃতিত্ব গুলোই আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে।
৪) প্রযুক্তিগত দক্ষতা : আপনার ফিল্ড রিলেটেড বা উক্ত চাকরি রিলেটেড সফটওয়্যার গুলো, যেগুলো তে আপনি দক্ষ তা অবশ্যই Resume তে সংযোজন করুন।
৫) সফট স্কিলস : আপনার সফট স্কিলস যেমন – মেনেজমেন্ট স্কিলস, লিডারশিপ স্কিলস ইত্যাদি Resume তে অবশ্যই দিবেন।
৬) ব্যক্তিগত সাফল্য : আপনার ব্যক্তিগত কিছু সাফল্য, যা আপনার সফট স্কিলস গুলোকে সমর্থন করবে, সেগুলো অবশ্যই দিন Resume তে।
৭) একটি মাস্টার Resume তৈরি করুন : একটি মাস্টার Resume তৈরি করুন, যেখানে আপনার যাবতীয় সব তথ্য থাকবে এবং এটিকেই প্রতিবার এডিট করে বিভিন্ন চাকরির জন্য আবেদন করবেন।
৮) এক পৃষ্ঠার মধ্যে Resume সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করুন : Resume এ সাধারণত ১টি পৃষ্ঠায় লেখাই শ্রেয়, তবে সর্বোচ্চ ২ পৃষ্ঠার হতে পারে।
এবার আসি কি কি করা যাবেনা একটি Resume – তে –
১) Resume – তে মিথ্যা তথ্য দেওয়া : Resume তে বানিয়ে বানিয়ে স্কিলস বা অভিজ্ঞতা দিবেন না। Resume তে মিথ্যা বলার কারণে ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনি সহসাই হেনস্থার শিকার হতে পারেন।
২) অতিরিক্ত ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া : আপনার ছবি,উচ্চতা, বয়স, বৈবাহিক অবস্থা ইত্যাদি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৩) রেফারেন্সে যাদের নাম দিবেন, তাদের সাথে কথা না বলে নাম দেওয়া : রেফারি হিসেবে যাদের নাম দিবেন, তাদের সাথে আগে থেকেই কথা বলে নিবেন, যাতে করে পরবর্তীতে অপ্রস্তুত অবস্থায় না পড়তে হয়।
৪) Resume তে গ্রামাটিকাল ভুল করা : Resume ২-৩ বার চেক করবেন অবশ্যই পাঠানোর আগে। Resume এর গ্রামাটিকাল ভুল প্রথম ধাপেই আপনাকে চাকরির দৌড় থেকে বের করে দিবে।
৫) সব চাকরির আবেদনেই একই Resume ব্যবহার করা : সব চাকরির রিকুয়ারমেন্টস একই থাকে না, তাই সব চাকরিতে একই Resume এর ব্যবহার আপনার অপরিপক্কতার পরিচয় দিবে এবং প্রথমেই আপনাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।
৬) যেসব দক্ষতা সবাই সচরাচর তাদের Resume তে দিয়ে থাকে, সেগুলো ব্যবহার করা : যেসব স্কিলস বা দক্ষতা সবাই ই ব্যবহার করে সেগুলো লেখা থেকে বিরত থাকুন, যেমন – মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, টিমওয়ার্ক, গুড লিসেনার ইত্যাদি।
৭) অতিরিক্ত কালার এবং টেক্সট ইফেক্ট ব্যবহার করা : Resume হতে হবে সিম্পল এবং এলিগ্যান্ট। অতিরিক্ত পরিমাণে কালার এবং টেক্সট ইফেক্টের ব্যবহার আপনার উপর চাকরিদাতার বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করবে।
৮) দুই পৃষ্ঠার বেশি Resume লেখা : দুই পৃষ্ঠার বেশি যেন Resume কখনোই না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একজন চাকরিদাতার কাছে শত শত Resume জমা পড়ে, সুতরাং সংক্ষেপে, সুন্দর ভাবে সাজিয়ে যে Resume লিখতে পারবে জয় তারই হবে।
এই টিপস গুলো অবশ্যই মনে রাখবেন একটি Resume লেখার সময়, এই “Do’s & Don’t’s” গুলোই হয়তো একদিন আপনাকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিবে।
Resume সম্পর্কিত আরো তথ্য জানতে, এখানে ক্লিক করুন।
Written by
Aqib Adnan Shafin
Content Writing Intern
YSSE.