একজন নেতা হবার সাথে সাথে আসবে অনেক দায়িত্ব। আপনি যাদের সাথে এবং যারা আপনার জন্য কাজ করছে তাদের উপর আপনার ভালো প্রভাব সৃষ্টি করাও সেই দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। নেতা হিসেবে সবে আত্মপ্রকাশ করে থাকুন বা বহু বছর ধরে বহু কর্মীকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন না কেন, আপনাকে সবসময় শিখতে হবে এবং উন্নতির দিকে যাবার চেষ্টা করে যেতে হবে।
যেহেতু নেতৃত্ব দেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা, সেহেতু আপনাকে এবং আপনার স্টাফদেরকে সবসময় প্রখর থাকতে হবে। এখানে প্রখন হওয়া মানে হলো বুদ্ধিমত্তার সাথে নিজের দুর্বল জায়গাগুলোকে অনুধাবন করা এবং সেগুলোকে সংশোধনে যথেষ্ট কাজ করা।
৫টি সাধারণ ভুল প্রায় সকল নেতাই সবস্তরেই করে থাকেন। নিম্নে সেগুলো সম্পর্কে এবং কীভাবে সেগুলো এড়িয়ে চলা যায় তা আলোচনা করা হলোঃ
১/ অহংকার এবং নম্রতার অভাব:
যেকোনো ক্ষমতাশীল পদে নিজেকে নেওয়া নিজের ‘আমি’ এর জন্য অনেক ভালো, কিন্তু ক্ষমতাকে ভুল অর্থে ব্যবহার করবেন না। আপনার কর্মীরা যেন না ভাবে আপনি ত্রুটি-বিচ্যুতির ঊর্ধ্বে। নেতা হিসেবে কখনোই নিজের ভুলগুলোকে বুঝতে ভয় করা যাবে না। সবাই কোনো না কোনো ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয় এবং সেখান থেকেই শিখতে হয়। আর এভাবেই এগিয়ে যাওয়া যায়।
ভুল হলে বা মন্দ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেললে উদাহরণসহ আপনার টিমের কাছে স্বচ্ছতা বজায় রাখুন অহংকারী না হয়ে।
২/ আবেগীয় চিন্তাঃ
কোনো পরিস্থিতিতে আমাদের পছন্দ বা সিদ্ধান্ত সহজেই আবেগ দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে, এবং সেটি হয়ও। কিন্তু সেটি যদি হয় ব্যবসা ক্ষেত্রে সেটির খারাপ প্রভাবটাই বেশি হয়। আপনার টিমকে আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাতে হলে তাদের সামনে লজিক উপস্থাপন খুবই জরুরি। কিন্তু আপনি যখনি আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন সেই সিদ্ধান্তের কোনো লগিক আপনি খুঁজে পাবেন না। আর এ ধরণের সিদ্ধান্তই আপনার নেতা হিসেবে অকার্যকর করে তুলবে।
একজন নেতা হিসেবে প্রথমেই খেয়াল রাখবেন কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার পূর্বে সবার সাথে আলোচনা করেছেন কী না। এর মাধ্যমে আপনি আবেগীয় হয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর মন্দ প্রভাব বুঝতে পারার সাথে সাথে লজিক্যাল সিদ্ধান্তেও উপনিত হতে পারবেন।
৩/ দ্বন্দ্ব-বিবাদ এড়িয়ে চলা:
একজন নতুন নেতার জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো মতনৈক্যকে কীভাবে নিবেন এবং টিমের ভিতরের সমস্যাগুলোকে কীভাবে গ্রহণ করবেন। দেখা গেল আপনি চাচ্ছেন সমস্যাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে কিন্তু আপনি সমাধানে না গিয়ে সেগুলোকে এড়িয়ে চলছেন। কোনো সমস্যাকে অঙ্কুরেই বিনাশ করতে না পারলে তা কোনো বড় রূপ নিতেই পারে।
এমন পরিবেশ সৃষ্টি করুন যেখানে ক্রমাগত ফিডব্যাক দেয়াকে উৎসাহিত করা হবে এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে স্থির থাকবে।
৪/ অপ্রয়োজনীয় কাজ গ্রহণ:
নেতা হতে যেসব বৈশিষ্ট্য প্রয়োজন তার মধ্যে অন্যতম হলো তারা বুঝতে পারেন কী করতে হবে এবং কীভাবে করতে হবে। যখনিএকজন নেতা টিমের সদস্য হিবে দায়িত্ব পালন করবেন তারা টিমকেই দেখবেন। আর এভাবে করলে আপনার টিম মেম্বেররা ৭৫% কাজ করবে এবং বাকিটা নেতার উপর বর্তাবে। আর এভাবে একজন নেতা যখন অনেক দায়িত্ব নিয়ে ফেলবেন টিমের জন্য তখন পুরো কাজটাই ভুল দিকে এগুবে।
নেতা হিসেবে আপনার টিমকে ঠেলা অর্থাৎ কাজকে সন্তুষ্টি পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য কাজে উৎসাহ প্রদান। আপনার কাজ সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান।
৫/ নিজের ক্ষমতায় আস্থা না থাকা:
আপনি নেতা হতে পেরেছেন তখনি যখন অন্যরা আপনার মুল্যায়নকে সমর্থন করেছেন। নিজের উপর আস্থা না থাকলে আপনি আপনার পজিশনকে ধরে রাখতে পারবেন না।
আপনাকে শুনতে হবে অন্যদের কথা মনোযোগের সাথে। আর আপনাকে এটাও অন্তর থেকে বিশ্বাস করতে হবে যে আপনি যা করছেন তা ভাল। নিজের কাছে বিশ্বস্ত থাকাটা সবক্ষেত্রেই জরুরি।
কানিজ ফাতেমা কলি