ট্রেনে ভ্রমণ করা নিয়ে আমাদের সকলের মনেই কোথাও না কোথাও একটি স্মৃতি রয়েছে। রয়েছে রেলপথে ভ্রমণের কিছু অভিজ্ঞতাও। হয়তো বাইরের দেশের মত উন্নত ট্রেনে চড়ার সৌভাগ্য আমাদের হয়নি। তবে আমাদের নিজস্ব রেলপথে ভ্রমণও কম রোমাঞ্চকর নয়। গ্রাম বাংলার সবুজ ছবির মত গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া, পুকুর খাল-বিল এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে ভ্রমণ কেবলমাত্র এই ট্রেন যাত্রাতেই সম্ভব। এবার এই ট্রেনই আমাদের জীবনে একটি বিশেষ মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে। তা হলো আমাদের দেশে প্রথমবারের মত এলিভেটেড রেলপথ বসতে যাচ্ছে। এবার এই এলিভেটেড রেলপথ কি?, কেনই বা এটি একটি বিশেষ মাত্রা যোগ করবে জানতে নাহয় পড়ে আসা যাক এই ব্লগটি।
সাধারণত রেলপথ মাটির সাথে সংযুক্ত থাকে। তবে এলিভেটেড রেলপথ হলো যেসব রেলপথ মাটি থেকে বেশ উপরে via duct অথবা এলিভেটেড কোনো গঠনের উপর থাকে। দেশে এই প্রথম এ রেলপথ পদ্মা সেতুর সাথে একসাথে বসতে চলেছে। সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে গেলে ২০২২ সালের জুন মাসে নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত এই পদ্মা সেতু চালু হতে যাচ্ছে। এটি দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের চলাচলের ভোগান্তি অনেকটিই কমিয়ে দিবে। শুধু এই পদ্মা সেতুই নয় এর সাথে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও যোগ করা হবে। ঢাকা থেকে যশোর জেলার দীর্ঘ ১৬৯ কিমি. এর ৪৬% রেলপথের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে।
রেলমন্ত্রীর মতে, ২৩ কিলোমিটারে এই এলিভেটেড রেলপথ ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা পর্যন্ত পৌঁছাবে। তার সুত্র অনুযায়ী এতে ৪১৮ টি প্যান বসবে এই ১৭০ কিমি. দীর্ঘ সিংগেল ট্র্যাক রেলপথের জন্যে যার খরচ হতে যাচ্ছে ৩৯,২৪৬ কোটি টাকা। তবে সরকার চাইলে প্রয়োজন অনুযায়ী পরবর্তীতে একে ডাবল ট্র্যাক রেলপথে পরিণত করতে পারে।
তবে ব্রিজের উপর কাজ করার অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত এর কাজ স্থগিত থাকবে। এছাড়া বাকি কাজ এগোতে কোন সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন রেল মন্ত্রী। সড়ক পরিকল্পনাই তাদের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য তাই পদ্মা সেতুর কাজ বেশ দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে এই রেলপথের কাজ। ঢাকা-যশোর রেলপথের সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে তবে কাজে দেরি হলে ঢাকা-ভাঙ্গা ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই চালু করা হবে। ঢাকা-যশোর রেলপথের সেবা পেতে লেগে যেতে পারে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়। ঢাকা-মাওয়া অংশের কাজ এগিয়েছে প্রায় ৪৩% আবার বুড়িগঙ্গার উপর দিয়েও এই প্রথম এলিভেটেড রেলপথ হবে যার কাজ ও এগিয়েছে ৭১%। তবে সবচেয়ে বড় অংশের কাজই বাকি যা পদ্মা সেতুর সাথে জড়িত। পদ্মা সেতুর অংশের কাজ শুরু করতেও অপেক্ষা করতে হতে পারে ২০২২ এর মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত বলে জানা গিয়েছে।
কাজে দেরি হলেও বাংলাদেশে এই প্রথম এত বড় বাজেটের কাজ হতে যাচ্ছে তাও আবার এলিভেটেড রেলপথ যা আমাদের জীবনে সত্যিই একটি বড় প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে।
আমাদের অন্যান্য ব্লগ পড়তে ক্লিক করুন এখানে।
Nuzhat Naoshin
Intern, Content Writing Department