বিশ্বজুড়ে তেলের বাজারে আগুন লাগার খবরটি নিশ্চয়ই আপনার অজানা নয়? অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে অন্যান্য ব্যবসায়ীরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তেল ব্যবসায়ীদের মুনাফা হয়েছে আকাশচুম্বী। সৌদি আরবের আরামকো তেলের কোম্পানি সম্পর্কে কে না জানে? বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি তেলের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এটি। তেলের চাহিদা বাড়ার সাথে দাম যেভাবে বেড়েছে ঠিক সেভাবেই বেড়েছে তেল কোম্পানির মুনাফাও। আসুন এই ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেই।
আরামকো নামের জ্বালানি তেলের কোম্পানিতেও এখন তেলের উচ্চমূল্যর প্রভাব পরছে। উচ্চ চাহিদা আর উচ্চমূল্য একত্রিত হয়ে এই চলতি ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধে সৌদি আরামকোর নিট মুনাফাকে বাড়িয়ে দিয়েছে ২৮৮ শতাংশ পর্যন্ত। এর পরিমাণ সংখ্যায় বলতে গেলে দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে পঁচিশ কোটি বিলিয়ন ডলার (তথ্যসূত্র বিবিসি অনলাইন)।
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে অনেক দেশই ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। ফলে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় বিভিন্ন আলোচিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকেও। কিন্তু তেলের বাজার যেন বরাবরই গরম। বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হওয়ার সাথে সাথে মানুষের চলাচল যেমন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে ঠিক তেমনি বিশ্ববাণিজ্যও ধীরে ধীরে অচলাবস্থা কাটিয়ে কিছুটা সচল হচ্ছে। তাই তেলের বাজারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনটি বেশ ভালোভাবেই দৃষ্টিগোচর হয়েছে। দেখুন না!! বর্তমান তেলের বাজারে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেল বিক্রি হচ্ছে ৭০ ডলারে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন এই দাম আরো বাড়বে।
উপর্যুক্ত তেলের প্রতিষ্ঠান সৌদি আরামকোর এর প্রধান নির্বাহী জনাব আমিন নাসের তাঁর একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে- “আমাদের ২০২১ সালে অর্জিত অভূতপূর্ব মুনাফাই দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে অবিশ্বাস্যভাবে জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। খুব সম্ভবত করোনার কারণে অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যগুলো নিজের অবস্থা পুনরুদ্ধারের প্রবল চেষ্টা করছে। তাই এমন প্রত্যাবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে বিশেষ করে তেলের বাজারে। আমাদের ব্যবসায়িক কৌশলগত দিক দিয়েও নিজেদের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিচ্ছি যেন পরিবর্তনশীল বাজারের সাথে খাপ খাওয়াতে পারি। তা না হলে উঠতি চাহিদার সাথে পেরে উঠতে বেশ বেগ পেতে হবে আমাদের সবাইকেই।“
আপনি যদি ভেবে থাকেন যে কেবল সৌদি আরামকো-ই হলো একমাত্র তেলের প্রতিষ্ঠান যারা ব্যাপক হারে করোনা মহামারিকে আশীর্বাদ হিসেবে পেয়ে মুনাফা অর্জন করছে তাহলে আপনার ধারণা ভুল। কারণ এই প্রতিষ্ঠান বাদেও যুক্তরাষ্ট্রের অয়েল জায়ান্ট এক্সন জানিয়েছে যে, এই বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাঁরা চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার আয় করতে পেরেছে। যেখানে প্রথম প্রান্তিকে আয়ের পরিমাণ ছিল মাত্র এক বিলিয়ন ডলার। এদিকে ইউরোপের রয়্যাল ডাচ শেল ২০১৯ সালের পর থেকে চলতি ২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা অর্জন করেছে। সামনে হয়তো অন্য কোনো ক্ষেত্র আমাদের জন্য নতুন চমক নিয়ে আসবে।
এরকম আর ব্লগ পেতে এখানে ক্লিক করুন
সায়মা আক্তার শান্তা
ইন্টার্ন, কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট
YSSE