আপনার এ মাসের বিদ্যুৎ বিল দেয়া হয় নি, ফোনের ব্যালেন্স শেষ, কেনাকাটা করার শেষে দেখলেন যে নগদ অর্থ নেই, এক জায়গায় আজই টাকা পাঠাতে হবে কিন্তু ব্যাংক বন্ধ– এই কথাগুলো শুনে নিশ্চয়ই দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে পরার কথা আপনার। আপনার এই দুশ্চিন্তাকে নিমিষেই দূর করবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো-
আপনার যদি একটি সাধারণ মোবাইল কিংবা স্মার্টফোন থেকে থাকে তবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার অংশ আপনিও হতে পারেন। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা মূলত মোবাইল কিংবা ট্যাবলেটের মতো ডিভাইস দ্বারা আর্থিক লেনদেন করার সুবিধা দিয়ে থাকে। এমনকি গ্রাহকের সুবিধার্থে অ্যাপের মাধ্যমেও ব্যাংকিং কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা রয়েছে। দিনের যেকোনো সময়েই আপনি আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন এই ডিজিটাল মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে। উক্ত সেবা যেমন আর্থিক লেনদেনকে করেছে সহজ ও গতিশীল ঠিক তেমনি এটি লেনদেনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিয়েছে গ্রাহকদের। বাংলাদেশে এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়েছে ২০১১ সালে। প্রাথমিক অবস্থায় এটি ততটা জনপ্রিয় না হলেও, বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার ব্যবহারকারীর সংখ্যা এর জনপ্রিয়তার কথাই জানান দেয়।
আজ থেকে ১০ বছর আগে এ দেশে হয়তো কেউ কল্পনাও করেনি যে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। অথচ বর্তমানে বাংলাদেশে নগদ, বিকাশ, রকেটসহ মোট ১৫টি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু আছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সাফল্যের সঙ্গেই তাদের কার্যক্রম চালু রেখেছে।
মোবাইল ব্যাংকিং সেবা আপনাকে দিচ্ছে অসংখ্য সুযোগ-সুবিধা। মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে গ্রাহক তার নির্ধারিত সেবা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত এজেন্ট বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের এটিএম বুথে কিংবা ব্যাংকের দ্বারা অর্থ উত্তোলন করতে পারেন। এই ব্যাংকিং সেবা যে শুধু অর্থ লেনদেনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে তা নয়। মোবাইল রিচার্জ, বেতন পরিশোধ, কেনাকাটা অথবা রেস্টুরেন্টে বিল প্রদান, টিকিট ক্রয় কিংবা যেকোনো পরিষেবার বিল প্রদান- সবই সম্ভব হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং এর কল্যাণে। আপনার দৈনন্দিন জীবনের টুকিটাকি খরচের বিষয়টিকে জটিল থেকে সহজ করেছে এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা।
এবারে আসি এই ডিজিটাল সেবাটি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কতটুকু সুবিধা দিয়েছে তা নিয়ে। উক্ত ব্যাংকিং সেবার সবচেয়ে বড় সুবিধাটি হলো যেকোনো অঞ্চল থেকেই আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব। মূলত প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এই মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমেই ব্যাংকিং সেবার আওতায় এসেছে। সরকারি বিভিন্ন লেনদেনের কাজও বর্তমানে এই ব্যাংকিং সেবার আওতাভুক্ত। মোবাইল ব্যাংকিং এর বহুমুখী সুবিধা অতি অল্প সময়ে পাওয়া যায় বলে বর্তমানে বেশিরভাগ আর্থিক লেনদেনের কাজটি এই ডিজিটাল মাধ্যমেই করা হয়ে থাকে। সময়মতো আর্থিক লেনদেনের কারণে কোনো কাজই আর আটকে থাকে না। লেনদেন পরিচালনার খরচও হ্রাস হয় এই সেবার মাধ্যমে। এমনকি আপনার কাছে নগদ অর্থ না থাকলেও মোবাইল পেমেন্টের মাধ্যমে আপনি অর্থ প্রদানের কাজটি নিমিষেই করে ফেলতে পারেন।
এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরে গিয়েছেন যে আর্থিক বিষয়গুলোর জটিল সমস্যা সরল সমাধানে পরিণত হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কল্যাণে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের প্রসার আর্থিক উন্নতির সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে এবং একইসাথে দেশের সাধারণ জনগণকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্ত করেছে।
আমাদের আরো ব্লগ পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
Writer
Sayeda Tanvin Tasnim
Intern, Content Writing Department
YSSE