“চাচা আপন প্রান বাঁচা” এ প্রবাদটি আমাদের বর্তমান সমাজে ব্যপকভাবে প্রচলিত।কিন্তু এ আপন প্রান বাঁচানোর পাশাপাশি কিছু মানুষ সবসময়ই সমাজের অন্যান্য মানুষদের নিয়ে বাঁচতে চায়, তাদের নিয়ে ভালো থাকতে চায়। আজকে বলবো এরকম ই একজন মানুষের গল্প যিনি সবসময়ই মানুষকে নিয়ে ভেবেছেন।তাদের নিয়ে ভালো থাকতে চেয়েছেন।সে স্বপ্নবাজ মানুষটি হচ্ছেন লক্ষ্মীপুর জেলার কৃতি সন্তান,একজন সফল উদ্যোক্তা মামুনুর রশীদ।
মামুনুর রশীদ লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান।পড়াশোনা শেষ না করেই একসময়ে জীবিকার্জনে পাড়ি জমান প্রবাসে।কিন্তু প্রবাসে গিয়েও তার মন পড়ে থাকে দেশের মাটিতেই,দেশের মানুষের জন্যই।পরবর্তীতে প্রবাস থেকে ফিরে আসেন দেশে।শেষ করেন তার পড়াশোনা।এরপর ঢাকার উত্তরাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকুরি করেন।কিন্তু একসময় তার মনে হয়, “এতে তো শুধু আমি ভালো থাকছি” কিন্তু উনি চাইতেন যে আশেপাশের গরীব, অসহায় মানুষদের নিয়ে ভালো থাকতে।এ চিন্তাভাবনা থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার প্রয়াস জাগে মামুনুর রশীদের।আশেপাশের কিছু মানুষজন নিয়ে শুরু করেন গাড়ির টায়ার থেকে কয়লা উৎপাদন।সাফল্য ও পেয়েছিলেন।কিন্ত একসময় জানতে পারেন যে এটি পরিবেশের জন্য মারত্মক হুমকিস্বরূপ।অতঃপর ছেড়ে দেন এ উদ্যোগ টি।ভাবতে থাকেন নতুনভাবে কি করা যায়।এর মাঝখানে আবার যোগ দেন সরকারি ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইডিসিএল এ।চাকুরিরত অবস্থায় একবার বাড়ি এসে দেখেন যে তার এলাকায় বিপুল সুপারি পাতা ফেলনা অবস্থায় যত্রতত্র পড়ে আছে।এবার তিনি এগুলো দিয়ে কাজে লাগানোর কথা ভাবতে থাকেন।আগের বারের পরিবেশের ক্ষতির ব্যপারটাও এবার মাথায় নিয়ে আগাতে থাকেন।অবশেষে বহু জল্পনা কল্পনা শেষে গ্রামের ৫-৬ জন কর্মী নিয়ে শুরু করেন কেমিক্যালমুক্ত, পরিবেশবান্ধব সুপারি পাতার বাটি,থালা সহ বিভিন্ন তৈজসপত্র উৎপাদন যা ইতোমধ্যে সমগ্র জেলায় বিপুল সাড়া ফেলে দিয়েছে।পরিবেশবান্ধব এবং স্বল্পমূল্যে পাওয়া যায় বিধায় এর গ্রহনযোগ্যতাও ব্যাপক।তিনি তার কিছু পন্য রফতানিও করেছেন।মামুন সাহেব তার এ উদ্যোগ নিয়ে বলতে গেলে বলেন,”আমি মানুষের উপকার করতে চেয়েছি তা হয়তো অনেকাংশেই করতে পেরেছি”।তার এ উদ্যোগ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে গিয়ে বলেন যে এ উদ্যোগ জনপ্রিয় ছিল না এটিকে তার জনপ্রিয় করে তুলতে হয়েছে।শুরুতে মূলধনজনিত সমস্যা থাকলেও আস্তে আস্তে তিনি তা কাটিয়ে উঠছেন।বর্তমানে তার কারখানায় প্রায় ২০ জন শ্রমিক কাজ করছেন।
তার এ পন্য গুলো একসময় প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে মানুষের কাছে সমাদৃত হবে এ আশাবাদ তিনি ব্যক্ত করছেন।আমরাও তার এ প্রত্যাশাকে সাধুবাদ জানাই এবং এগিয়ে যাবেন এ স্বপ্নবাজ মানুষ এ আশাবাদ ব্যক্ত করি।
Abdul Gofur Sharid
YSSE