গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। চলতি বছরের মে মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫ শতাংশ, যা কিনা ২০০৮ সালের আগস্টের পর সর্বোচ্চ। মূল্যস্ফীতির দরুণ পণ্যের দাম বেড়ে যায় এবং ফলস্বরূপ, মুদ্রার ক্রয় শক্তি হ্রাস পায়। যদি পণ্যের দামের পাশাপাশি আয় না বাড়ে তবে প্রত্যেকের ক্রয় ক্ষমতা কার্যকরভাবে হ্রাস পাবে, যার ফলস্বরূপ একটি ধীরগতির অর্থনীতির সৃষ্টি হয়।
ফেডারেল রিজার্ভ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি যদি ২ শতাংশের মধ্যে রাখা যায় তাহলে তা ভালো অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকেই নির্দেশ করে। তবে সে লক্ষ্য ছাড়িয়ে যায় গত এপ্রিলেই। এপ্রিলে এটি আগের বছরের তুলনায় বেড়েছিল ৩ শতাংশ। গত বছরের আগস্টে এক বৈঠকে ফেডারেল ঘোষণা করেছিল যদি সর্বাধিক কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যায়, তাহলে মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশের ওপরে যেতে পারে।
চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসেই বিভিন্ন খাতে, বিশেষত পরিবহন খাত এবং সংলগ্ন টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সার্বিক মূল্যস্ফীতি সূচকের এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। পাশাপাশি বেড়েছে আবাসন খরচ, এপ্রিল থেকে এই খরচ বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। যদিও স্বাস্থ্যখাতে এটি তেমন প্রভাব ফেলেনি।
গত বসন্তে করোনার মহামারির প্রথম ওয়েভের কারণে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণের চাহিদা ব্যাপক হ্রাস পায়। শিডিউল বিলম্বিত এবং দেশজুড়ে লকডাউন কার্যকারণের ফলে বিমানখাতে ভাটা পড়েছে। গত বছরের এপ্রিলে এক ধাক্কায় বিমানভাড়া আগের বছরের চেয়ে কমে যায় ২৪ শতাংশ এবং পুরো ২০২০ সালজুড়ে মন্দাভাব এর মধ্য দিয়ে কাটায় এ খাত। এভাবে বছর তো গেল। তবে, এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বিমানভাড়া আগের বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেড়ে গেল।
মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের মধ্যে থাকা আসলে অর্থনৈতিক বিকাশের পক্ষে ভালো। ভোক্তা যখন মনে করে সামনের সময়ে আরও দাম বাড়বে, তখন বর্তমান সময়ে তার কেনাকাটার প্রবণতা বেড়ে যায়। এটি চাহিদা বাড়ায়, দাম বাড়ায়। অন্য কথায় বলা যায়, মূল্যস্ফীতি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পূর্বাভাস। যখন মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের নিচে থাকে ফেডারেল রিজার্ভ সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করে। এটি নীতি নির্ধারণী সুদের হার কমিয়ে দেয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে। মন্দা রোধে এটি কাজ করে। আর যখন ফেড মূল্যস্ফীতিকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে, তখন এটি সংকুচিত আর্থিক নীতি নেয়।
ফেডারেল অন্যান্য সরবরাহ-শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে জনসাধারণকে সতর্ক করেছে। তারা বলছে, অর্থনীতির খাতগুলো স্বাভাবিক হয়ে উঠতে সময় লাগবে। তবে এই সংকট কেটে গেলে সামনে এমন দ্রুত মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে না বলে আশাব্যক্ত করেছে ফেডারেল রিজার্ভ।
এমন আরো ব্লগ দেখতে ক্লিক করুন।
Sabiha Jannat Rafa
Content Writing Intern
YSSE