আমরা অনেকেই শিক্ষাজীবন চলমান অবস্থায় বা শেষে বাস্তবিক অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন হিসেবে যুক্ত হয়ে থাকি এবং এই ইন্টার্নশিপ আমাদের ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিভিন্ন সময়ে ছোট বড় নানান প্রতিষ্ঠান ইন্টার্নশিপ অফার করে থাকে কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে সঠিক ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম বেছে নেওয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য একটি প্রক্রিয়া।
বেশীরভাগ সময়েই আমরা কোনকিছু বিবেচনা না করেই,ঝোঁকের বশবর্তী হয়ে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে আবেদন করে ফেলি,যা আমাদের ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আমাদের অবশ্যই এমন ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে যা উপভোগ্য হবে এবং আমাদের সিভিতে অন্যান্য মাত্রা যুক্ত করবে।
তাই সঠিক ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম বেছে নিতে এই ৫টি বিষয়কে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।
১. আপনার আকাঙ্খা নির্ধারণ করুনঃ প্রথমেই নির্ধারণ করুন যে একটি ইন্টার্নিশিপ প্রোগ্রাম থেকে আপনি ঠিক কি আশা করছেন। অর্থাৎ আপনি ইন্টার্নিশিপ থেকে পেমেন্ট আশা করছেন কি না,ইন্টার্নশিপ ভার্চুয়ালি করতে চাচ্ছেন না সরাসরি, কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে আপনি কাজ করতে ইচ্ছুক এবং কি ধরনের সাপোর্ট আপনি সেই প্রতিষ্ঠান থেকে চান ইত্যাদি বিষয়াবলি সম্পর্কে আপনাকে শুরু থেকেই পরিস্কার ধারনা রাখতে হবে। উক্ত বিষয়াবলি বিবেচনায় রাখলে সঠিক ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে যাওয়া যায়।
২.কর্মক্ষেত্রের পরিবেশঃ বেশীরভাগ সময়েই আমরা এই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেই না কিন্তু ইন্টার্নশিপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। যে প্রতিষ্ঠানে আপনি ইন্টার্ন হিসেবে যুক্ত হচ্ছেন যাচ্ছেন, সেখানে আপনি মানিয়ে নিতে পারবেন কিনা বা সেখানকার পরিবেশ আপনার স্কিল ডেভলপমেন্টের জন্য উপকারী কিনা এইসব বিষয় সম্পর্কে আপনাকে আগে থেকেই সচেতন থাকতে হবে অন্যথায় ইন্টার্নিশিপ প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার পর আপনি বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীন হতে পারেন।
৩.নেটওয়ার্কিং এর সুযোগঃ যে প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নিশিপ এর আবেদন করতে যাচ্ছেন সেখানে নেটওয়ার্কিং এর সুযোগ কতটা তা অবশ্যই আপনাকে বিবেচনা করতে হবে। বর্তমান সময়ে ক্যারিয়ার গঠনে এবং চাকরি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং এর গুরুত্ব অপরিসীম।তাই আবেদনের পূর্বে আপনাকে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। ইফেক্টিভ নেটওয়ার্কিং এর সুযোগ না থাকলে ইন্টার্নশিপ ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
৪.স্কিল এপ্লাই এবং নতুন স্কিল অর্জনঃ ইন্টার্নশিপের একটি অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনার বিদ্যমান যে স্কিলগুলো আছে সেটির বাস্তবিক প্রয়োগ শেখা এবং নতুন স্কিল অর্জন করা। তাই যে কোন ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে আবেদনের পূর্বে নিশ্চিত করতে হবে যে সেখানে আপনার বিদ্যমান স্কিল কার্যকরী কিনা এবং নতুন স্কিল অর্জনের সুযোগ আছে কিনা।
৫.প্রাক্তন ইন্টার্নদের সাথে যোগাযোগঃ আপনি যে প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন হিসেবে যুক্ত হতে চাচ্ছেন সেখানকার প্রাক্তন ইন্টার্ন বা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করাটা খুবই কার্যকর একটি পদক্ষেপ। প্রাক্তন ইন্টার্নরা আপনাকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কাজের পরিবেশ,সুবিধা-অসুবিধা,সুযোগ,কর্মজীবনে কতটা উপকারী ইত্যাদি নানা বিষয়ে সম্পর্কে জানাতে পারবে যা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সহায়তা করবে। আজকাল বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম থেকেই আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং প্রাক্তন ইন্টার্নদের মতামত দেখে নিতে পারেন।
উপরোক্ত বিষয়াবলি বিবেচনা করলে আপনি অবশ্যই একটি কার্যকরী ইন্টার্নিশিপ প্রোগ্রাম বেছে নিতে সমর্থ হবে এবং ক্যারিয়ার গঠনে এক ধাপ এগিয়ে যাবেন।
আমাদের আরো ব্লগ পড়ুন – এখানে
মোহাম্মদ ফয়সাল
ইন্টার্ন
এডমিন এন্ড এইচআর ডিপার্টমেন্ট
ওয়াইএসএসই