রূপচর্চায় ইদানিং কোরিয়ান প্রোডাক্টসের বাজার বেশ রমরমা। মুহূর্তেই গায়ের রঙ ফর্সাকারী ক্রিম এর উপর আস্থা না থাকলেও, কোরিয়ান মহিলাদের মতো সুন্দর, নিঁখুত, তরুণ ত্বক আর সিল্কি চুল পেতে সবাই ঝুঁকছেন কোরিয়ান প্রোডাক্টসের দিকে। শ্যাম্পু, স্পা ক্রিম, সিরাম, ফেস অয়েল থেকে শুরু করে বিভিন্ন অ্যান্টিএজিং ক্রিম সর্বত্রই কোরিয়ান প্রোডাক্টসের জয়জয়কার।
বিউটি ট্রেন্ডে কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রডাক্টসের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নতুন নতুন সব স্কিন কেয়ার ট্রেন্ড তৈরিতে কোরিয়ানদের জুড়ি মেলা ভার। গ্লাস স্কিন, মোচি স্কিন, ক্লাউডলেস স্কিন, বিবি ক্রিম সহ বেশকিছু স্কিন কেয়ার ট্রেন্ডের শুরুটা পশ্চিম এশিয়ার এই ছোট্ট দেশটি থেকে। ইদানিংকালে কোরিয়ান প্রডাক্টস হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে বেশ কিছু প্রাকৃতিক মাস্ক যাতে মিলবে পরিপূর্ণ কোরিয়ান বিউটি। আর এই কোরিয়ান বিউটির মূল রহস্যই হলো ত্বক পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি ত্বকের পানিশূন্যতা পূরণ।
কিন্তু কোরিয়ান জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের এসকল স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস আমাদের ত্বকে ঠিক কতটা কার্যকরী?
ত্বকের সুরক্ষায় আমরা অনেকেই রুটিন করে CTM – Cleansing, Toning & Moisturising রুটিন মেনে চলি। আর প্রতিদিনকার এই স্কিন কেয়ার রুটিনে কোরিয়ান প্রোডাক্টসের উপর রয়েছে আমাদের বিশেষ আস্থা। তবে এসকল স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই আমাদের মনে রাখা জরুরী, কোরিয়ান এই সব প্রোডাক্টস কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়দের ত্বকের উপযুক্ত নয়।
অ্যান্টি এজিং ক্রিম ব্যবহার না করাই ভালো
আমাদের অনেকেরই ধারনা, কোরিয়ান মেয়েরা তারুণ্য ধরে রাখতে এবং ত্বকে বলিরেখা প্রতিরোধে বয়সের অনেক আগেই অ্যান্টি এজিং ক্রিম ব্যবহার করে থাকেন। আর এই ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে আমরা অনেকে বয়সের অনেক আগেই অ্যান্টি এজিং ক্রিম ব্যবহার শুরু করি। এতে বয়সের অনেক আগেই আমাদের ত্বকে বলিরেখার ছাপ পড়ে এবং সেই সঙ্গে চামড়াও কুঁচকে যেতে থাকে।
কেবলমাত্র তৈলাক্ত ত্বকের জন্যই ফেসিয়াল অয়েল?
অনেকেই এই ধরনের ধারণা পোষণ করেন যে, কেবলমাত্র তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ফেসিয়াল অয়েল প্রযোজ্য। ঠিক তা নয়। ফেসিয়াল অয়েল যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন। তবে ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ফেসিয়াল অয়েল এর উপাদান গুলো ভালোভাবে দেখে নেবেন। এক্ষেত্রে, ফেসিয়াল অয়েল এর উপাদান হিসেবে আঙুর, সূর্যমুখীর তেল ত্বকের জন্য বেশ ভালো।
কেবলমাত্র মেয়েদের জন্যই কোরিয়ান প্রোডাক্ট নয়…
কোরিয়ান প্রোডাক্ট সকলেই ব্যবহার করতে পারেন। অনেকেই এমনটি মনে করেন যে, কেবলমাত্র মেয়েরাই কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারে ভাল ফলাফল পাবেন তবে বাস্তবে তা নয়। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যে কেউই স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টসগুলো ব্যবহার করে ভাল ফল পেতে পারেন।
ডাবল ক্লিনজিং ( Double Cleansing) এর সঠিক সময়?
ডাবল ক্লিনজিং এর ক্ষেত্রে সকাল, সন্ধ্যায় কিংবা সুবিধামতো যেকোনো সময়ই অনায়াসে বেছে নেওয়া যায়। কেবলমাত্র রাতেই যে ডাবল ক্লিনজিং করা যায় এমনটা নয়। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অবশ্যই মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ঠিক তেমনি বাইরে থেকে ফিরে ও ভালো করে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। দিনে দুবার মুখ পরিষ্কার করলে ত্বক এমনিই ভালো থাকবে। আলাদা করে ফেসিয়াল অয়েল কিংবা অ্যান্টি এজিং ক্রিম ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না।
কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস ব্যবহারের পূর্বে একটা কথা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। কোরিয়ান নারীরা যতই নিখুঁত হোক না কেন, কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস ব্যবহার করলেই যে আপনার ত্বক সুন্দর, নিখুঁত, দাগহীন হবে এরকমটা একেবারেই নয়। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়দের জন্য স্কিন কেয়ার সঠিক পদ্ধতি কি হতে পারে?আমাদের কি তবে কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রডাক্টসকে একেবারেই অগ্রাহ্য করা উচিত?
কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস ভারতীয়দের কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়দের ত্বকের উপযোগী না হলেও, কোরিয়ান রূপচর্চা আমাদের বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের সঙ্গে পরিচিতি করিয়ে থাকে। প্রাকৃতিক উপাদানের মাস্কের সাহায্যে রূপচর্চার জন্য কোরিয়ান নারীরা প্রশংসার পাত্র। অপরদিকে জাপানিজ নারীদের রূপচর্চার বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে অন্যতম হলো Rice Water। রূপচর্চায় Rice Water এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে আমাদের পরবর্তী ব্লগে।
SYEDA FAIRUZ NOSHIN
Content Writing Intern
YSSE